১. খোলা জানালা দিয়ে বয়ে আসছে মৃদু হাওয়া। বালিসে মাথা রেখে রবীন্দ্রনার্থের গল্পগুচ্ছ পড়ছি। মাথার উপর জ্বলছে ১০০ পাওয়ারের লাইট। সারাদিন বই পড়তে পড়তে ভাল লাগছিলো না তাই রবীন্দ্রনার্থের গল্প পড়ে মনটাকে ফ্রেশ করতে চাইছলাম। তিন দিন সরকারী ছুটে হওয়া মেসের সকলে বাড়ি চলে গেছে। পরীক্ষার কারণে শুধু আমি একলা রয়ে গেছি বহুকালের পুরনো এই বাড়িটিতে। ঢাকার কাছে থাকার জন্য এর চেয়ে আর ভালো যায়গা খুঁজে পেলাম না। আমার বন্ধু মরশেদ এখানে থাকে। ভাড়া তুলনামূলক ভাবে কম হওয়ায় আমিও উঠে গেলাম। এই দু’তলা বাড়িটিতে আমি ছাড়া আর কেউ নেই। দারোয়ান আছে গেটের কাছে থাকবে রাত দশটা পর্যন্ত। তারপর প্রধান ফটক বন্ধ করে আমাকে থাকতে হবে এই আলোÑছায়ায় ভরা বাড়িটিতে। বাতাসের জোড় বেশি তাই জানালাটা বন্ধ করে দিলাম। তারপর আবার বই পড়তে লাগলাম। হঠাৎ কোন সংকেত না দিয়ে জানালাটা খুলে গেল। চমকে উঠলাম আমি চমকে গেল আমার হৃদপি-।
বড় বড় চোখ করে আমি জানালার দিকে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষন। তারপর এক পা’ দু’ পা করে জানালাটা বন্ধু করে সবে মাত্র বিছানায় উঠে বসেছি এমন সময় লাইট নিভে গেল। অন্ধকারে ডেকে গেল আমার চারিপাশ, বালিশের নীচ থেকে দিয়াশলায়টা বের করে। মোম জ্বালিয়ে বসলাম, ভাল লাগছিলো না। ভাবলাম নীচে গিয়ে দারোয়ানের সাথে কিছুক্ষণ গল্প করা যাক। গেটের কাছে গিয়ে দেখি দারোয়ান ঘুমে জিমুচ্ছে। কাছে গিয়ে বসলাম, আমাকে দেখে বলল কোন সমস্যা হয়েছে? আমি বললাম না, এমনিতেই আপনার সাথে কথা বলতে মন চাইলো তাই চলে আসলাম। তারপর অনেকক্ষণ উনার সাথে কথা বললাম। যতবারই এই বাড়ি সম্পর্কে জানতে চেয়েছি ততবারই উনি প্রসঙ্গে অন্যদিকে ঘুড়িয়ে দিয়েছেন। জানতে পারলাম উনি আজ বিশ বছর ধরে এই বাড়িটি দেখা শুনে করছে। এর মধ্যে অনেকেই এখানে এসেছে কেউ বেশি থাকতে পারেনি। এমনকি মারা ও গিয়েছে অনেকে কিন্তু কেন এমন হয়েছে সেটা বলেনি। জানতে চেয়েও ব্যার্থ হয়েছি। রাত দশটা বাজাতেই উনি আমাকে সাবধান করে চলে গেলেন। প্রধান ফটক বন্ধ করে, আমি ঘরে এসে বসলাম। ভয় করছিলো আমার খুব ভয় করছিলো। কারেন্ট এখনো আসেনি। আজকের রাতটা আমার কাছে বেশ অভিশপ্ত মনে হলো। এই বাড়ির আদো কোন ঘটনা আমার জানা নেই। তবুও নিজ জ্ঞান থেকে বলতে পারি। এই বাড়িটি কোন সাধারণ বাড়ি নয়। আজকের রাতের মতোই এটা একটা অভিশপ্ত বাড়ি। অশীরিদের বসত হয়তো এই বাড়িতেই আছে।
বড় বড় চোখ করে আমি জানালার দিকে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষন। তারপর এক পা’ দু’ পা করে জানালাটা বন্ধু করে সবে মাত্র বিছানায় উঠে বসেছি এমন সময় লাইট নিভে গেল। অন্ধকারে ডেকে গেল আমার চারিপাশ, বালিশের নীচ থেকে দিয়াশলায়টা বের করে। মোম জ্বালিয়ে বসলাম, ভাল লাগছিলো না। ভাবলাম নীচে গিয়ে দারোয়ানের সাথে কিছুক্ষণ গল্প করা যাক। গেটের কাছে গিয়ে দেখি দারোয়ান ঘুমে জিমুচ্ছে। কাছে গিয়ে বসলাম, আমাকে দেখে বলল কোন সমস্যা হয়েছে? আমি বললাম না, এমনিতেই আপনার সাথে কথা বলতে মন চাইলো তাই চলে আসলাম। তারপর অনেকক্ষণ উনার সাথে কথা বললাম। যতবারই এই বাড়ি সম্পর্কে জানতে চেয়েছি ততবারই উনি প্রসঙ্গে অন্যদিকে ঘুড়িয়ে দিয়েছেন। জানতে পারলাম উনি আজ বিশ বছর ধরে এই বাড়িটি দেখা শুনে করছে। এর মধ্যে অনেকেই এখানে এসেছে কেউ বেশি থাকতে পারেনি। এমনকি মারা ও গিয়েছে অনেকে কিন্তু কেন এমন হয়েছে সেটা বলেনি। জানতে চেয়েও ব্যার্থ হয়েছি। রাত দশটা বাজাতেই উনি আমাকে সাবধান করে চলে গেলেন। প্রধান ফটক বন্ধ করে, আমি ঘরে এসে বসলাম। ভয় করছিলো আমার খুব ভয় করছিলো। কারেন্ট এখনো আসেনি। আজকের রাতটা আমার কাছে বেশ অভিশপ্ত মনে হলো। এই বাড়ির আদো কোন ঘটনা আমার জানা নেই। তবুও নিজ জ্ঞান থেকে বলতে পারি। এই বাড়িটি কোন সাধারণ বাড়ি নয়। আজকের রাতের মতোই এটা একটা অভিশপ্ত বাড়ি। অশীরিদের বসত হয়তো এই বাড়িতেই আছে।
২. আমি জানিনা আমার জীবনে আজ কি ঘটতে যাচ্ছে। ছাদের উপর কারা যেন হেটে চলছে। মনে হচ্ছে কোন দানবিও পা বার বার আঘাত করছে ছাদের উপর। ইচ্ছে হচ্ছিলো এই বাড়ি থেকে পালিয়ে অন্য কোথাও চলে যাই। কিন্তু তাও সম্ভব নয়। এ বাড়ির ছাদে আমার কখনো যাওয়া হয়নি। শুধু শুনেছি এ বাড়ির ছাদের গেট বন্ধ। কারো কাছে তার চাবি নেই। চার তলায় একটা ঘর আছে তালাবদ্ধ। কে যানে সে ঘওে কি আছে। দারোয়ানের মুখে শুনেছি, সে ঘরের ভেতর কি আছে তা কেউ বলতে পাওে না। শুধু এতটুকুই বলতে পাওে সে ঘরের দরজা হঠাৎ কখনো ককনো মাঝরাতে খুলে। আর যে দিন খুলে সেদিনই কোন না অঘটন ঘটে। ছাদে ওঠার সিঁড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে প্রথম যেদিন এ বাড়িতে আসলাম সেদিনই আমার মনে একটা ভয় জন্মেছিলো। এই বাড়িটি যতই খুতিয়ে দেখলাম ততই ভয় ভারতে লাগলো। আমার সাথে যারা ছিল সবাই চাকুরী করে। তাই ওরা রাতে আসতো। সারাদিন আমি একা একা এ ভুত্বরে কুঠিরে পরে থাকতাম। সন্ধ্যার পরে যেন এ বাড়িটি ভয়ের কারখানা হয়ে যায়। অনেক বার মোরশেদকে বলেছি এ কথা। মোরশেদ বলেছে দেখে শুনে ভাল বাড়িতে চলে যাবে। তা ছাড়া এত কম দামে ভাড়া তো আগে পেতে হবে। এমনিতেই জায়গাটা শহর থেকে বাইরে। সন্ধ্যার পরে চারিদিক নীরব হয়ে যায়। আশে পাশে কোন জন বসতি নেই। কাঁচা রাস্তা ধরে দশ মিনিট হাটার পর পাকা সড়ক পাওয়া যাবে। কিন্তু এত রাতে গাড়ি পাওয়া যাবে কিনা সেটাই মুশকিলের ব্যাপার। তা যাই হোক একবার চেষ্টা করে দেখি না কি করা যায়। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ১২টা বেজে ৩৫ মিনিট। সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে এলাম, এবং খুব দ্রুত গতিতে। অন্ধকারের পথ ধরে গিয়ে দাড়ালাম রাস্তার উপর। কিন্তু আমার আশা দুর-আশায় পরিণত হলো। যখন দেখলাম আধাঘন্টা দাড়িয়ে থেকেও কোন গাড়ি দেখা মিললো না। এদিকে ঝড়ো হাওয়ার সাথে সাথে বৃষ্টি পড়তে শুরু করলো। তাই দাড়িয়ে না থেকে আবার সেই বাড়িটির দিকে চলতে লাগলাম। আসার সময় দেখলাম কারেন্টের তার ছিরে পড়ে আছে রাস্তার উপর। তার মানে আজ রাাতে আর কারেন্ট আসবে না। যতদূর চোখ যায় শুধুই অন্ধকার। কোথাও এক বিন্দু আলো নেই……….কেবলই অন্ধকার। বাড়িটির সামনে এসে দাড়াতেই মনে হলো মৃত্যু যেন আমাকে হাত বাড়িয়ে ডাকছে। এক অদ্ভুত ভয়ংকর আওয়াজ চারিদিকে, যা কলিজার পানি পর্যন্ত শুকিয়ে দেয়। বিদ্যুৎ চমকানোর আলোয় ভুত্বরে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বাড়িটিতে। হালকা কুয়াশা জমেছে বাড়িটিকে গিরে। যেন হরর ছবির ভুত্বরে বাড়ি। প্রধান গেট খুলে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে এলাম। ভিজে শরীর নিয়ে ঘরে প্রবেশ করলাম। আমার ঘর কবরের মত অন্ধকার।
৩. যাওয়ার আগে মোমবাতিটা দ্বিবি জ্বলছিলো এত তাড়াতারি মোমবাতি শেষ হওয়ার কোন মানে খুজে পেলাম না। হেমন্তের রাত এমনিতেই অনেক বড়। কি করা যায় ভাবছি। পকেটে থাকা মোবাইলটা বের করলাম। কারো সাথে যোগাযোগ করলে মনটা হালকা হবে। ফোন করলাম মোরশেদের কাছে। ওর মোবাইল বন্ধ। ফোন করলাম আমার এক শিক্ষকের কাছে তিনি ঢাকাতেই থাকেন। এখানে একবার এসেছিল, সেদিনই আমাকে বলেছিল আমি যেন এই বাড়িটা ছেড়ে দেই। স্যারের কথা মতো আমি বাড়িটা ছেড়ে দিয়েছি। সামনের মাসের এক তারিখে নতুন বাসায় উঠবো। আজ বুঝতে পারছি স্যার কেন আমায় সেদিন বাড়িটা ছাড়তে বলেছিল। হঠাৎ দরজা খোলার শব্দ পেলাম। আমার কলিজাটা কেঁপে উঠলো। তবে চারতলার সেই ঘরের…………..। অজানা আমার বুক বুক কাঁপছে। কানে ভেসে আসছে পায়ের শব্দ কে যেন সিঁড়ি বেয়ে উপর থেকে নীচে নামছে। আমার ভয় আরো বেড়ে গেল। এদিকে ঝড়ের তান্ডব বেড়েই চলছে। অনেক কষ্টে স্যারকে ফোনে পাওয়া গেল। স্যারকে বললাম স্যার আমি খুব সমস্যায় আছি। আমি জানিনা আজ রাতে আমার জীবনে কি ঘটতে যাচ্ছে।…………লাইনটা কেটে গেল। আবার কল করতে গেলাম……..ব্যালেন্স নেই। স্যার ফোন করলেন। রিসিভ করে বললাম সব ঘটনা খুলে বললাম। কিন্তু নেটওয়াক সমস্যার কারণে স্যার ঠিক মত কিছুই বুঝলো না। লাইনটা আবার কেটে গেল। এবার নেটওয়াক শূন্য মোবাইল হাতে আমি বসে রইলাম বিছানার উপর। মোববাতি নেই তাই মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে রেখেছি। তাতে সেটার ব্যাটারি খরচ হচ্ছে বেশি। হয়তো ঘন্টাখানেকের মধ্যে সেটাও বন্ধ হয়ে যাবে।
৪. ঝড় থামার কোন নাম গন্ধ নেই। আমার ঘরের জানালাটা একবার বন্ধ হচ্ছে আর খুলছে। আমি সেটাকে বার বার বন্ধ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছি। চারিদিকে কেমন যেন এক ভয়ানক শব্দ হচ্ছিলো। কোথাও কোন আলো নেই শুধু মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকানোর আলোতে কিছুদূর দেখা যাচ্ছে। সত্যি সত্যি যা ভেবেছিলাম, ঘন্টাখানেকের মধ্যেই মোবইলটা বন্ধ হয়ে গেল। আমি অন্ধকারের কারাগারে বন্দি হয়ে গেলাম। হঠাৎ মনে হল কে যেন চাপা সুরে কাঁদছে। জানালার ওপাশে। আমি আস্তে আস্তে হেটে গেলাম, না কোথাও কেউ নেই। এমন সময় হৃদয়ে আতংক তুলে কে যেন আমার দরজায় নখ করলো। আমি তখন ভয়ে রীতিমত কাপছি। আমার গলা দিয়ে কোন স্বর বেরুচ্ছে না। আমি দাড়িয়ে আছি ঘরের এক কোনে। একটা ইদুর আমার পাশ দিয়ে দৌড়ে গেল। আমি চিৎকার দিয়ে উঠলাম। দরজার ওপাশের আওয়াজটা থেমে গেল। খুব বড় বড় ইঁদুর ঘরের মধ্যে ছোটাছুটি করছে। যা আগে কখনো দেখতে পাইনি। আমার পায়ের পেছনে ভিজে ভিজে অনুভব করলাম। মোবাইলটাকে আবার চালূ করলাম ব্যাটারী লো সিগনাল দিয়ে সেটা আলো জ্বাললো। সেই আলোতে স্পর্ষ্ট দেখলাম একটা ইঁদুর বড় এক টুকরো মাংস এনে আমার পায়ের কাছে বসে খাচ্ছে। আর তার রক্ত আমায় পায়ে এবং প্যান্টে লেগে ভিজে ভাব তৈরি করেছে। এমন দৃশ্য আমি কোনদিন দেখেনি। কোন বইতে পড়ি ও নি কখনো। ভয় আমাকে আবার গ্রাস করলো।
৫. মোবাইলের আলো নিভে গেছে। সেই সথে বাইরের ঝড়ও থেমে গেছে। চারিদিকে এক অদ্ভুত নিরবতা। শুধু মাঝে মাঝে নুপুরের সুর আর ছোটাছুটির শব্দ পাওয়া যাচ্ছিলো। কারা যেন ফিস ফিস করছে বাতাসে ভেসে। আমার চোখের সামনে যেন হাজারো প্রেত্মাতা দাড়িয়ে আছে। ভয়ংকর তাদের চোখ, হাত, নখ, পা, চুল। চোখ বুঝলেই সেই একি দৃশ্য। ফ্যানের সাথে ফাসিতে ঝুলন্ত তুরণী। বড় বড় চোখ, জিব্বা বেড়িয়ে এসেছে মুখ থেকে, হাতে বড় বড় নখ। ঘরময় আগর বাতির গন্ধ যেন কোন মরা লাশ আমার সামনে শুয়ে আছে। মনে হচ্ছে চারিদিকে রক্তের নদী আমি তার মাঝে সাতার কাটছি। আমার সামনে পিছনে মৃত্যু তারা করছে। আমি চোখ বুঝতেও পারছিনা আবার মেলতেও পারছি না। এটা কি প্রচন্ড ভয়ের কারণে মানসিক সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে নাকি সত্যি দেখছি কিছুই বুঝতে পারছি না। কিন্তু আমার মন আমি দুর্বল করিনি। যতটুকু সম্ভব শক্ত রাখার চেষ্টা করছি। আলো ছাড়া ঘড়ি দেখতে পারছিলাম না তাই অনুমান করতে চাইলাম ক‘টা বাজে। হতে পারে রাত ৩টা কি সাড়ে ৩টা এর বেশি নয়। এখনো সকাল হতে অনেক দেড়ি। কাল সকালেই আমি এই অভিশপ্ত বাড়ি ত্যাগ করবো। আর নয়, এখানে থাকলে নিশ্চিত মৃত্যু এতে কোন সন্দেহ নেই। হঠাৎ কানে একটা শব্দ ভেসে এল। ভালো করে সে দিকে কান পাতলাম। কে যেন সিড়ি বেয়ে নেমে এল। তারপর আস্তে আস্তে এদিকে হেটে আসছে। পায়ের শব্দটা নিরব শব্দকে ও হারমানিয়েছে। আমার দরজার কাছে এসে আওয়াজটা থামলো এবং দরজা নখ করলো। আমি এবার সাহস হারালাম না। অন্ধকারে দরজার দিকে হেটে যেতে লাগলাম। আমার শরীরের সাথে কিছু একটা ধাক্কা খেল। হাত দিয়ে দেখি, কার যেন পা ঝুলছে। মনে হচ্ছে ফ্যানের সাথে কোন তরুণী ফাসিতে ঝুলছে। আবার হাত বাড়িয়ে দেখি কিছুই নেই। আমার সাথে কি ঘটছে এইসব আমি নিজেও জানিনা। শুধু বুঝতে পারছি আলো না পেলে অন্ধকারে হার্ট এ্যাটাক করে যে কোন সময় আমি মারা যেতে পারি। অশীরির জন্য এটাই স্বার্থক। হেটে গিয়ে দরজা খুলে দিলাম। কি অদ্ভুত ব্যাপার দরজার সামনে কেউ নেই। অথচ একটু আগেও আমি হেটে আসার শব্দ পেয়েছি। এমন সময় বাইরে বিদ্যুৎ চমকে উঠলো। সেই আলোতে আমি দেখলাম আমার সামনে একটা বডি দাড়িয়ে আছে সেটার গা থেকেই আগর বাতির গন্ধ আসছে। মাথা নেই পা‘ দুটো বাকা। গায়ে সাদা কাপড়। আমার থেকে মাত্র এক হাত দূরে, সাথে একটা তরুনী , চোখ দুটো তার বেরিয়ে আসতে চাইছে। গলায় কালো মোটা দাগ। চোখ দুটি সাদা কোন মণি নেই, বাকা হয়ে পা দুটি ঘুরে আছে। আমার মনে হলো মৃত্যু যেন আমায় ছুয়ে ফেলেছে আমি আর বাঁচতে পারবো না। এটাই বুঝি আমার জীবনের শেষ মুহুর্ত। আমি…………..আমি………………………………………জ্ঞান হারালাম। যখন জ্ঞান ফিরলো, আমি নিজেকে বিছানায় আবিস্কার করলাম। দারোয়ান এসে আমাকে সিঁড়ির নিচে পরে থাকতে দেখে। তারপর বিছানায় এনে শুইয়ে দেয়। গতকাল রাতের কথা মনে পড়তেই আতংকে উঠলাম আবার। দুপুর নাগাদ সেই বাড়ি ত্যাগ করলাম তারপর আর কোনদিন সেই বাড়ি মুখি হইনি। তার কয়েক দিন পরই শুনলাম…বাড়ির দারোয়ন চাঁচা মারা গেছে। বাড়ির ভেতরেই তাকে মৃত্য অবস্থায় পাওয়া যায়। এখন আর সেই বাড়িতে কেউ থাকে না। থাকে শুধু অন্য জগতের অশীরিরা। (সমাপ্ত)